বৃহঃস্পতিবার, ১লা মে ২০২৫, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • ২০২৬ নারী বিশ্বকাপের সময়সূচি ও ভেন্যুর নাম ঘোষণা
  • মুম্বাইয়ে বিশ্বমঞ্চের ঢেউ- প্রিয়াঙ্কার দৃপ্ত বার্তা
  • এক ভূখণ্ড, দুই রাষ্ট্র, অগণিত কান্নার উপত্যকা
  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের মহান মে দিবস আজ
  • উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান: সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে
  • ভারতকে রুখতে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ইমরান খান
  • সকল নাগরিকদের জন্য আসলো বড় সুখবর
  • অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন সামান্থা রুথ প্রভু
  • পাকিস্তানের ধাওয়া খেয়ে পিছু হটল ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান
  • ‘২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’, অডিওটি শেখ হাসিনার

মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত হলেও শর্ত নিয়ে চলছে আলোচনা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত:
২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪

সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘ দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করেছিল। জাতিসংঘের অনুরোধে শর্ত সাপেক্ষে মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে রাখাইনের জন্য করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে কোন শর্তে রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর দেবে বাংলাদেশ, তা নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র সোমবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছে।সূত্রটি জানিয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরের পর সরকার রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন জাতিসংঘের সঙ্গে শর্ত চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তবে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চলমান সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা রাখাইনের জন্য করিডর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এমন করিডর চালুর সিদ্ধান্তের আগে এ বিষয়ে রাখাইনের বিবদমান পক্ষগুলোর ঐকমত্য থাকা জরুরি। তাদের মধ্যে ঐকমত্য না হলে এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হতে পারে। পাশাপাশি রয়েছে নিরাপত্তাঝুঁকি। ফলে এমন একটি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলসহ দেশের অভ্যন্তরে আলোচনা অপরিহার্য।

প্রসঙ্গত, মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে গত রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এতটুকু আপনাদের বলতে পারি, নীতিগতভাবে আমরা এতে সম্মত। কারণ, এটি একটি হিউম্যানিটেরিয়ান প্যাসেজ (মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ) হবে। কিন্তু আমাদের কিছু শর্ত রয়েছে, সেই বিস্তারিততে যাচ্ছি না। সেই শর্তাবলি যদি পালিত হয়, আমরা অবশ্যই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’

চলতি বছরের শুরুতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে জানায়, রাখাইনের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এর ফলে রাজ্যটিতে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। জাতিসংঘের মতে, রাখাইনের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করা না গেলে এবার শুধু রোহিঙ্গা নয়, সেখানে বসবাসরত বাকি জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। তাই সেখানকার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় করিডর করতে বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছে জাতিসংঘ।

গত বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, রাখাইনে পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের আয়ের কোনো উৎস নেই, ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস নেমেছে, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চ অথবা এপ্রিল মাসের মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ করিডরটিকে মানবিক ক্ষেত্রে ত্রাণ পাঠানোর জন্য চিহ্নিত করলেও করিডরটি ঝুঁকিপূর্ণ। আরাকান আর্মিকে কোণঠাসা করতে সব সরবরাহ আটকে দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এখন বাংলাদেশ হয়ে যে ত্রাণ যাবে, তা রাখাইনের বেসামরিক নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে, নাকি আরাকান আর্মি সেগুলোকে দখলে নেবে, তার নিশ্চয়তা ঢাকার কাছে নেই।

এ অঞ্চল বিশ্বে মাদক, অবৈধ অস্ত্র পাচারসহ নানা আন্তসীমান্ত অপরাধের অন্যতম রুট হিসেবে পরিচিত। করিডর দিলে মাদক বা অবৈধ অস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা থাকবে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে বর্তমানে কোনো স্বীকৃত প্রশাসন নেই। ফলে সেখানকার ‘অস্বীকৃত’ কারও সঙ্গে কোনো ধরনের দর-কষাকষির আলাদা ঝুঁকি রয়েছে । সেই সঙ্গে অন্যান্য নিরাপত্তাঝুঁকি তো রয়েছেই। মানবিক করিডর পেতে শুধু বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও সম্ভাবনা খোঁজা উচিত জাতিসংঘের।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর